যাকাত ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ ৷ এটি শর্তসাপেক্ষ ফরজ এবং এমন একটি ফরজ যার অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা দিতে হবে ৷ এ যাকাত প্রদানের আদেশ আল্লাহ তাআলার পক্ষে থেকে তিনি আল কুরআনের ৮২ জায়গায় যাকাতের কথা বলেছেন ৷ যেমন তিনি বলেনঃ
"তোমরা নামাজ প্রতিষ্ঠা করো এবং যাকাত দাও ৷ তোমরা নিজেদের জন্য পূর্বে যে সৎকর্ম প্রেরণ করবে, তা আল্লাহর কাছে পাবে ৷ তোমরা যা কিছু করো, নিশ্চয় আল্লাহ তা আলা তা প্রত্যক্ষ করেন " (বাকারা ১১০)
সুতরাং যাকাত প্রদানের নির্দেশ আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের অবশ্যই তা মানতে হবে ৷৷
এখন যাদের উপর যাকাত ফরজঃ
১৷ মুসলমান হতে হবে ৷
২৷ স্বাধীন হতে হবে ৷
৩৷ বালেগ হতে হবে ৷
৪৷ জ্ঞান বান হতে হবে ৷
৫৷ নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকতে হবে
৬৷ নেসাব পরিমাণ সম্পদ এক বছর স্থায়ী হওয়া
৭৷ মাল মৌলিক প্রয়োজনীয় না হওয়া (পোষাক, ঘর বাড়ি, আসবাবপত্র ইত্যাদি) ৷
৮৷ এবং মাল ঋণ মুক্ত হওয়া ৷
★ নিম্নের সম্পদের উপর যাকাত ফরজ
১৷ গৃহপালিত পশু ( উট, গরু, ছাগল ইত্যদি)
২৷ স্বর্ন - রৌপ্য বা নগত ক্যাশ
৩৷ ব্যবসার পন্য
৪৷ খনিজ সম্পদ
৫৷ ফল ও ফসল
★ নেসাবের পরিমাণ ঃ
স্বর্ণ ৭½ ভরি, রৌপ্য ৫২½ ভরি
গরু ৩০ টি
ছাগল ৪০টি
উট ৫টি
ওরশ 1/10 (সেচ না দিয়ে) অংশ বা 1/20 (সেচ দিয়ে আবাদ করলে)
এছাড়া ব্যবসার পন্য এবং খনিজ সম্পদের নিসাব নির্ধারিত হবে স্বর্ণ ও রৌপের মুল্যের হিসাবে ৷৷
বিঃদ্রঃ নেসাব পরিমাণ সম্পদ এক বছর স্থায়ী হতে হবে ৷
✔ ✔ যাকাতের বন্টন খাত ✔✔
আল্লাহ তাআলা বলেনঃ "যাকাত হলো কেবল ১৷ ফকির ২৷ মিসকীন ৩৷ যাকাত আদায়কারী (যাকাতের সম্পদ বন্টন কারী)
৪৷ যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন
৫৷ দাস-দাসী মুক্তির জন্য
৬৷ ঋণগ্রস্তদের জন্য
৭৷ আল্লাহর পথে জিহাদ করীদের জন্য
৮৷ মুসাফিরের জন্যে
এই হলো আল্লাহ তা আলার নির্ধারিত বিধান ৷ আল্লাহ তাআলা সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়" (সুরা তওবা -৬০)
এই হলো আল্লাহ নির্ধারিত যাকাত বন্টনের খাত ৷
※※ যাকাত আদায়ের গুরুত্ব ※※
আল্লাহ তাআলা বলেনঃ নিশ্চয় যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে, সৎকাজ করেছে, নামাজ প্রতিষ্ঠা করেছে এবং যাকাত প্রদান করেছে তাদের জন্য তাদের পুরষ্কার তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে ৷ তাদের কোন শঙ্কা নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না ৷ (সুরা বাকারা - ২৭৭)
উমর রাঃ হতে বর্ণিত রাসুল সাঃ বলেন, জলে বা স্থলে যেখানে সম্পদ বিনষ্ট হয় তা যাকাত না দেওয়ার কারনে ৷ (তবারানী)
সুতরাং যাকাত আদায় করলে সম্পদ নষ্ট হয় না
রাসূল সাঃ বলেন, যাকাত মাল কমায় না ৷ আর কোন বান্দা সদকার হাত প্রসারিত করলে তা প্রার্থীর হাতে পড়ার আগে আল্লাহ তাআলা হাতে পড়ে ৷ (সুবাহানআল্লাহ)
এছাড়া রাসূল সাঃ বলেন, যে ব্যাক্তি তার হালাল আয় থেকে একটি খেজুর দান করে আল্লাহ তাআলা তা নিজে হাতে গ্রহন করে এবং তোমরা স্বীয় ঘোড়ার বাচ্চাকে যেভাবে পালন করো তদ্রুপ যত্ন করে তা বৃদ্ধি করেন ৷ এমনকি তার পরিমান উহুদ পাহাড় পরিমাণ হয়ে যায় ৷ (আহমদ)
সুবাহানআল্লাহ বলবেন না?
বিঃদ্রঃ সবাই দান সদকা বেশি বেশি কর অধিক সওয়াব কামাই করো ৷ (আল্লাহ হাফেজ )