কালিজিরা অনেক অসাধারন গুন রয়েছে যা আপনি হয়তো জানেন না


দারুণ উপকারী কালিজিরা। তাই একে খাদ্য না বলে পথ্য বলাটাই ঠিক। জ্বর, কফ, গায়ের ব্যথা দূর করতে কালিজিরা একটা দারুণ ঘরোয়া ওষুধ। এতে রয়েছে খিদে বাড়ানোর উপাদান। অন্ত্রের জীবাণুকে নাশ করে শরীরের জমে থাকা গ্যাসকেও দূর করে দিতে কালিজিরার বিকল্প নেই। 

যারা মোটা হতে চান, তাদের জন্য কালিজিরা একটা ভালো পথ্য। কাঁচা কালিজিরা পিষে খেলে মায়ের দুধ বাড়ে। সন্তান প্রসবের পর কাঁচা কালিজিরা পিষে খেলে শিশু দুধ খেতে পাবে বেশি পরিমাণে। কালিজিরা নিজেই একটি অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিসেপটিক।

কালিজিরা সহজেই শরীরের রোগ-জীবাণু ধ্বংস করে দিতে পারে। এই অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদানের জন্য দেহের ঘা, ফোঁড়া কম সময়েই সারে। শাকের সঙ্গে কালিজিরা খাওয়াই রীতি। এতে শিশুদের ক্ষেত্রে মেধার বিকাশ ঘটে। দাঁতে ব্যথা হলে হালকা গরম জলে কালিজিরা দিয়ে কুলকুচু করলে ব্যথা কমে। জিহ্বা, টাকরা বা মাড়িতে থাকা খাদ্যের জীবাণু সহজেই মরে যায়। ফলে মুখে আর দুর্গন্ধ হয় না।

কালিজিরা ক্রিমি দূর করতেও পারে। তারুণ্য ধরে রাখতে মধ্যপ্রাচ্যে কালিজিরা খাওয়াটা দীর্ঘদিনের রীতি। কাজ করার শক্তিকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে এই কালিজিরা। সরাসরি খাওয়ার থেকে প্রথম প্রথম ভাত বা রুটির সঙ্গে কালিজিরা খাওয়াটা অভ্যাস করুন। প্রায় দুই হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে মানুষ খাবারের সঙ্গে ‘কালিজিরা’ গ্রহণ করে আসছে। কালিজিরার তেলও আমাদের শরীরের জন্য নানাভাবে উপকারি। কালিজিরার তেলে ১০০টিরও বেশি উপযোগী উপাদান আছে। এতে আছে প্রায় ২১ শতাংশ আমিষ, ৩৮ শতাংশ শর্করা এবং ৩৫ শতাংশ ভেষজ তেল ও চর্বি।

কালিজিরা আয়ুর্বেদীয় , ইউনানী, কবিরাজী ও লোকজ চিকিৎসায় ব্যবহার হয়। মশলা হিসাবে ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে, এটি পাঁচ ফোড়নের একটি উপাদান। রসুল (সাঃ) বলেছেন, “একমাত্র মৃত্যু ছাড়া সকল রোগের ঔষুধ এই কালিজিরা।’’ তাই প্রতিদিন অল্প করে ভাত বা রুটির সঙ্গে খেতে পারেন কালিজিরা।কালিজিরার বৈজ্ঞানিক নাম নাইজেলা সাতিভা। নাইজেলা সাতিভাকে আরবি ভাষায় বলা হয় হাব্বাত-উল-বারাকা (আশীর্বাদপুষ্ট বীজ) এবং ইংরেজিতে বলা হয় লাভ ইন দ্য মিস্ট।

কালিজিরার তেলের উপকার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, ইনসুলিন রোধ হ্রাস (এভাবে ডায়াবেটিস কমিয়ে রাখা), কাশি ও হাঁপানির উপশম, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি, হৃজ্জনিত সমস্যার আশঙ্কা হ্রাস, চুল পড়া হ্রাস, ত্বকের সুস্বাস্থ্য, মায়ের দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি, আর্থাইটিস ও মাংসপেশির ব্যথা কমাতে কালিজিরার তেল উপযোগী। তবে মনে রাখবেন- কালিজিরার তেল গর্ভাবস্থায় গ্রহণ করতে হয় না।

প্রায় তিন হাজার বছর ধরে চলে আসা গল্পগাথায় যে কালিজিরার মহৌষধি গুণের কথা বলা হয়েছে, ৫০ বছরে সেই ভাষ্য অর্জন করেছে বৈজ্ঞানিকভাবে সম্মতি ও সম্মান।কালিজিরা ভর্তা করার নিয়ম- কালিজিরা ২ টেবিল চামচ, রসুনের কোয়া ১ টেবিল চামচ৷ পেঁয়াজকুচি আধা টেবিল চামচ, লবণ স্বাদ অনুযায়ী, সরিষার তেল ১ চা চামচ৷একটি পাত্রে তেল গরম করে এতে সব উপকরণ একসঙ্গে দিয়ে ভালো করে টেলে নিন৷ কালিজিরা টালা হলে পাটায় মিহি করে বেটে নিন৷ সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

কালিজিরার শরবত-উপকরণ- কালিজিরা ১ টেবিল চামচ,পানি ৫ কাপ,চিনি ১ কাপের ৪ ভাগের ৩ ভাগ, লবণ সামান্য এবং শুকনা মরিচ ১টি।কালিজিরা ও শুকনা মরিচ মিহি করে বেটে নিন। বাটা কালিজিরা, লবণ, চিনি, পানি একসঙ্গে মিশিয়ে চামচ দিয়ে ভালোভাবে নাড়ুন।
২০ মিনিট ফ্রিজে রেখে দিন। ফ্রিজ থেকে নামিয়ে গ্লাসে ঢেলে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশন করুন।

Post a Comment

Thank you for your Comment

Previous Post Next Post

Contact Form