ঈমানের দাবিদারদের অবশ্যই ঈমানের অগ্নি পরিক্ষা দিতে হবে

ঈমানের প্রত্যেক দাবীদারকে অনিবার্যভাবে পরীক্ষার চুল্লী অতিক্রম করতে হবেই। বিভিন্ন ধরনের নিপীড়ন-নির্যাতন
সহ্য করতে হবে, বিপদ-মুসিবত ও সংকটের মুকাবিলা করতে হবে। 
আল্লাহ বলেন ‘তোমরা কি মনে করেছো তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করে যাবে, অথচ এখনো তোমরা সে অবস্থার সম্মুখীন হওনি, যে অবস্থার সম্মুখীন হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী (ঈমানদার)গণ? তারা সম্মুখীন হয়েছিল নির্মমতা ও দুঃখ-ক্লেশের এবং তাদের অস্থির করে তোলা হয়েছিল। 
এমনকি রাসূল (সা.)ও তার সাথে যারা ঈমান এনেছিল তারা চিৎকার করে বলে উঠেছিল আল্লাহর সাহায্য কবে আসবে? (তখনই তাদের সুখবর দেয়া হয়েছিল এই মর্মে যে) জেনে রাখো, আল্লাহর সাহায্য নিকটেই। (২ঃ২১৪) 
আল্লাহ বলেন- আমি তোমাদের অবশ্যই পরীক্ষা করবো যাতে আমি তোমাদের অবস্থা যাঁচাই করে দেখে নিতে পারি তোমাদের মধ্যে কে জিহাদকারী এবং কে ধৈর্যশীল। (সূরা মুহাম্মদের ৩১) 
রাসূল (সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যদি সত্যের কালেমা উচ্চারণ এবং মিথ্যা প্রতিরোধের জন্যে যুক্তি প্রদর্শন করে এবং নিজের প্রচেষ্টায় হক-এর সাহায্যের জন্যে কাজ করে সেই ব্যক্তির এই কাজ আমার সঙ্গে হিজরত করার চেয়ে বেশি উত্তম বিবেচিত হবে। 
রাসূল (সা.) আরো বলেন, ইসলামের পথে কারো এক ঘণ্টার কষ্ট সহ্য করা এবং দৃঢ়পদ থাকা তার ৪০ বছর এবাদতের চেয়ে উত্তম।
হযরত কাতাদা (রা.) বলেন, হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) আমাকে বলেছেন যে, রাসূল (সা.) বলেছেন, কেয়ামতের দিন দাঁড়িপাল্লা লাগানো হবে, সদকা খয়রাত যারা করবে তাদের দানের বিনিময়ে, পুরস্কার দেয়া হবে। নামায রোযা হজ্ব ইত্যাদি নেক কাজের বিনিময় দেয়া হবে। এরপর আল্লাহর পথে বিপদ সহ্যকারীদের পালা আসবে। তাদের জন্যে দাঁড়িপাল্লা লাগানোর আগেই তাদের নেক আমল ওজন হয়ে যাবে। তাদের বেহিসাব বিনিময় দেয়া হবে। 
আলাহ তায়ালা বলেন, ধৈর্যশীলদের তাদের পারিশ্রমিক বিনা হিসেবে দেয়া হবে। (সূরা জুমার, ১০) 
দুনিয়ার জীবনে বিপদে-মুসিবতে বিপন্ন অসহায় বান্দারা কেয়ামতের দিন বেহিসাব পুরস্কার পেতে থাকবেন। এই দৃশ্য দেখে দুনিয়ার জীবনে আরাম-আয়েশে বসবাসকারীরা আক্ষেপ করে বলতে থাকবে, আহা দুনিয়ার জীবনে আমার দেহ যদি কাঁচি দিয়ে কেটে টুকরো টুকরো করা হতো তবে আজ আমি অনেক বেশি পুরস্কার লাভ করতাম। অনেক বেশি মর্যাদা স্থায়ীভাবে লাভ করতাম। 
আল্লাহ বলেন- আর নিশ্চয়ই আমরা ভীতি, অনাহার, প্রাণ ও সম্পদের ক্ষতির মাধ্যমে এবং উপার্জন ও আমদানী হ্রাস করে তোমাদের পরীক্ষা করবো। এ অবস্থায় যারা সবর করে (সূরা বাকারা-১৫৫) ৩০)

Post a Comment

Thank you for your Comment

Previous Post Next Post

Contact Form